ছবি সংগৃহীত
অবশেষে ভারত ছাড়তে হচ্ছে বাঘের পোশাক পরে বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে আসা মো. রবিউল ইসলাম রবিকে। সবার কাছে যিনি টাইগার সমর্থক নামে পরিচিত। গতকাল শনিবার কানপুর থেকে তাকে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ রবিবার তিনি দিল্লি থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার ফ্লাইটে বাংলাদেশে ফিরবেন।
বাংলাদেশ-ভারতের সিরিজ দেখতে আসা রবিকে এভাবে মাঝপথেই ফিরে যাওয়ার কারণ কানপুর টেস্টের প্রথম দিনের একটি ঘটনা। যেখানে রবি প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন গ্যালারিতে তিনি ভারতীয় দর্শকদের মারধরের শিকার হয়েছেন। তার অবস্থা গুরুতর। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে রবির এই ঘটনা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। বিকেলে তারা জানায়, রবির সঙ্গে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। রবিও ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় তাকে কোনো মারধর করা হয়নি বলে জানান। তিনি পানিশূন্যতার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
কিন্তু রবির এই ঘটনা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমও বেশ গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রচার করে। বিষয়টি ভারত সরকারের অনেক উচ্চপর্যায়েও চলে যায় বলে জানা যায়। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ বেশ প্রতিক্রিয়া দেখান। এদিকে রবির এই ঘটনা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর উত্তর প্রদেশ পুলিশ তাকে নজরদারিতে রাখে। পরে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী শনিবার বিকেলে তাকে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার আগে তার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। দিল্লিতেও তিনি পুলিশের নজরদারিতে থাকবেন।
জানা গেছে, রবি খেলা দেখতে এসেছিলেন মেডিকেল ভিসা নিয়ে। ৫ আগস্টের পর ট্যুরিস্ট ভিসা দেওয়া বন্ধ আছে ভারতের। রবির মেডিকেল ভিসা নিয়ে মাঠে খেলা দেখতে যাওয়াটাকে ভালোভাবে নেয়নি পুলিশ। আগামীতে তাকে ভারতীয় ভিসা না দেওয়ারও সিদ্ধান্ত আসতে পারে। চেন্নাই টেস্টেও রবি একইভাবে তামিলনাড়ুর পুলিশের কাছে গ্যালারিতে হেনেস্থা হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন।
রবির এই ঘটনায় বাংলাদেশ দলও বিব্রত। ঘটনার দিনই দলের পক্ষ থেকে মিডিয়াতে প্রকাশ না করার জন্য বলা হয়েছিল। এদিকে রবি যে ভিডিও নিজের ফেসবুকে দিয়ে তার সঙ্গে মারধরের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছিলেন, সেই ভিডিও এখন আর নেই। পরে তিনি নিজে বিশাল এক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, তিনি আসলেই হেনেস্তার শিকার হয়েছেন।
তিনি আগে যা বলেছেন, তা উত্তর প্রদেশের পুলিশের কথামতো বলেছেন। এই ঘটনা ভুলভাবে তার বিপক্ষে মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সেখানে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামীতে তিনি আর বাংলাদেশ দলের খেলা দেখতে যাবেন না। যদি কখনো যান, তাহলে সাধারণ একজন দর্শক হিসেবেই যাবেন বলে উল্লেখ করেন।
সব মিলিয়ে রবির এই ঘটনা বাংলাদেশ দল ও সিরিজ কাভার করতে আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।