শুক্রবার ৩১ মার্চ ২০২৩, চৈত্র ১৭ ১৪২৯

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

বাংলাদেশ থেকে বেশি স্বর্ণ রয়েছে আফগানিস্তানের

অর্থনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৩৩, ৫ মার্চ ২০২৩

বাংলাদেশ থেকে বেশি স্বর্ণ রয়েছে আফগানিস্তানের

ছবি: ইন্টারনেট

চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিভিন্ন দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে স্বর্ণের মজুত বৃদ্ধি করছে। আপৎকালীন সময়ে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সোনায় অর্থ লগ্নির পথে ঝুঁকছে দেশগুলো। এসব দেশের রিজার্ভের বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে স্বর্ণ। কিন্তু এর উল্টোপথে হাঁটছে বাংলাদেশ। স্বর্ণের মজুতের বৈশ্বিক তালিকায় পেছনের সারিতে রয়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত, পাকিস্তান আফগানিস্তানের চেয়ে মজুত কম বাংলাদেশের।

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেষে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বর্ণ মজুত রয়েছে সবচেয়ে বেশি।

বৈশ্বিক তালিকায়ও দেশটির অবস্থান নবম। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) মজুতে স্বর্ণ রয়েছে ৭৮৭ দশমিক ৪০ টন। রিজার্ভে স্বর্ণ মজুতে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ, তালিকায় ১১০ দেশের মধ্যে ৬৪তম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে স্বর্ণের পরিমাণ ১৪ দশমিক শূন্য টন। অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মধ্যে পাকিস্তান আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বর্ণ মজুতের পরিমাণ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি, যথাক্রমে ৬৪ দশমিক ৬৫ ২১ দশমিক ৮৭ টন। নেপাল শ্রীলঙ্কায় এর পরিমাণ যথাক্রমে দশমিক ৯৯ শূন্য দশমিক ৪৭ টন।

ডব্লিউজিসির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে মূল্যবান ধাতুটির মজুত রয়েছে ৩৫ হাজার টনেরও বেশি। সব মিলিয়ে বিশ্বের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত উত্তোলিত স্বর্ণের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণে। ২০২২ সালেও বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের সবচেয়ে বড় নিট ক্রেতা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।

বর্তমানে পুরো বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্বর্ণ মজুত সবচেয়ে বেশি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে। হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে মজুতকৃত সোনার পরিমাণ হাজার ১৩৩ দশমিক ৪৬ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এর পরিমাণ হাজার ৩৫৫ দশমিক ১৪ টন। তালিকায় তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে থাকা দেশগুলো হলো যথাক্রমে ইতালি ( হাজার ৪৫১ দশমিক ৮৪ টন), ফ্রান্স ( হাজার ৪৩৬ দশমিক ৭৫ টন) রাশিয়া ( হাজার ২৯৮ দশমিক ৫৩ টন) তালিকায় এরপর রয়েছে চীন (ষষ্ঠ, হাজার ১০ দশমিক ৫১ টন), সুইজারল্যান্ড (সপ্তম, হাজার ৪০ টন), জাপান (অষ্টম, ৮৪৫ দশমিক ৯৭ টন), ভারত (নবম, ৭৮৭ দশমিক ৪০ টন নেদারল্যান্ডস (দশম, ৬১২ দশমিক ৪৫ টন)

ডব্লিউজিসির হিসাব অনুযায়ী, শুধু ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকেই বিশ্বব্যাপী ৪১২ টন স্বর্ণ কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। সব মিলিয়ে গত বছর হাজার ২০০ টন স্বর্ণ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। ষাটের দশকের বুলিয়ন মার্কেট বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে এমন গতিতে স্বর্ণ কিনতে দেখা যায়নি। গত মে মাসে তুরস্ক এক ধাক্কায় ২০ টন স্বর্ণ কিনেছে। একইভাবে প্রতিবেশী ভারত মধ্যপ্রাচ্যের কাতারও এখন স্বর্ণ কেনা বাড়িয়েছে। মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তানের মোট রিজার্ভের দুই-তৃতীয়াংশ এখন স্বর্ণ।

কাজাখস্তানও এখন স্বর্ণ মজুত বাড়িয়ে দ্বিগুণে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন স্বর্ণ না কিনলেও বিদ্যমান মজুত ধরে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে। তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ রিজার্ভের পরিমাণ দেশটির মোট বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ৭৮ শতাংশের সমান। জার্মানির ক্ষেত্রে হার ৭৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গাইডলাইন আছে। সে গাইডলাইন মেনে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা হয়। বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও আছে। ওই কমিটি বৈশ্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রিজার্ভ কীভাবে, কোন মুদ্রায় কতখানি কোথায় রাখবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে এখনো বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ মজুত আছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মজুত বাড়ানোর দরকার মনে হলে সেটিও করা হবে।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়