মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১০ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

পদ্মা সেতুতে লাইন স্থাপন শেষ, পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৪ এপ্রিল

আলো আভা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ৩০ মার্চ ২০২৩

পদ্মা সেতুতে লাইন স্থাপন শেষ, পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৪ এপ্রিল

ছবি: ইন্টারনেট

সড়ক পথের পর এবার সবশেষ স্লিপার বসানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর ওপর দেশের প্রথম আধুনিক পাথর বিহীন (ব্রাসলেস) রেলপথ নির্মাণ কাজ। দশমিক ১৫ কিলোমিটার এই রেলপথ এক সুতোয় যুক্ত করেছে পদ্মার দুই প্রান্ত মুন্সিগঞ্জের মাওয়া শরীয়তপুরের জাজিরাকে।

ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে আগামী এপ্রিল সেতুর ওপর পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা প্রকৌশলীদের। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দেশের বৃহত্তর রেল যোগাযোগের নেটওয়ার্ক। যা রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে যশোর-বেনাপোলসহ পায়রা মংলা বন্দরকে। রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে যোগাযোগের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করবে নতুন এই রেলপথ। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

মূল সেতুর ২৫ নাম্বার পিয়ারের ওপর থাকা নং মুভমেন্ট জয়েন্টের ওপর গতকাল বুধবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে সবশেষ স্লিপার বসানোর কার্যক্রম। মিটার স্লিপার ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে সড়ক পথের পর এবার সেতুতে নির্মিত রেলপথ প্রমত্তা পদ্মার বুকে দুটি প্রান্তকে যুক্ত করেছে এক সুতোতে। শতভাগ দৃশ্যমান হয়েছে মূল সেতুর সমপরিমাণ .১৫ কিলোমিটার রেলপথ। যার ওপর দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১২০ মাইল গতি বেগে ছুটবে দ্রুতগতির সব ট্রেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) আকাশ পথে চীন থেকে উড়িয়ে আনা হয় সব শেষ স্লিপারটি। নিখুঁতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাতেই স্লিপারটি বসিয়ে দেয়া হয় নাম্বার মুভমেন্ট জয়েন্টে। এরপর রাখা হয় পর্যবেক্ষণে।

তারপর বুধবার বিকেলে ৪টায় শুরু হয় প্রকৌশলীদের শেষ মুহূর্তের ঢালাইয়ের প্রস্তুতি। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া স্টেশন থেকে দ্রুত গতির রেল ট্রাকে করে সেতুতে পৌঁছান প্রকৌশলীরা, এরপর নিখুঁতভাবে শুরু হয় কংক্রেটিং এর কাজ। পরে দেড় ঘণ্টার মধ্যে সমাপ্তি ঘটে সেতুতে রেলপথের সবশেষ স্লিপার বসানোর কার্যক্রমের।

সময় রেলপথে পদ্মা জয়ের উল্লাসে বিজয়ী প্রতীকী চিহ্নভিদেখিয়ে ক্যামেরা বন্দী করে ধরে রাখা হয় সাফল্যের স্মৃতি। দেশের এই মেঘা প্রকল্পের সঙ্গে কাজ করতে পেরে গর্বিত মনে করছেন দেশি-বিদেশি চীনা শ্রমিক প্রকৌশলীরা।

পাথর বিহীন এই রেলপথ দিয়ে দ্রুত গতিতে চলাচল করবে ট্রেন। বিদেশি অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের প্রকল্পে কাজ করার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ রেলওয়ের আধুনিকায়নের পথে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটারের রেল পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র দুই ঘণ্টা। এতে দক্ষিণ অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীতে যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হওয়ার পাশাপাশি, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সহজে পৌঁছে যাবে গ্রাম থেকে শহরে যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

তবে প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার রেল পথ চালু করতে সব কাজ শতভাগ সম্পন্ন হতে আরও মাস সময় লাগবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন।

আর রেলপথের মতো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হবে রেল স্টেশনগুলোর নির্মাণ কাজ। পাশাপাশি আগামী এপ্রিল সেতুতে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের কথা জানিয়েছেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ।

তিনি বলেন, আগেই শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর সড়কপথের কাজ এরপর গত বছরের ২৫ জুন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে ২৬ জুন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় সেতুটি। এবার সেতুর নিচ তলার রেলপথের কাজ শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হচ্ছে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পদ্মা সেতুর দীর্ঘ বছরের বিশাল কর্মযজ্ঞ।

নির্মাণ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ শেষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ যেমন সহজ হবে তেমনি পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক দৃশ্যপট।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়