
ছবি সংগৃহীত
রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখনো স্তব্ধ পরিবেশ। রাসায়নিক গুদাম থেকে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত গ্যাসের কারণে আশপাশের কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন লাগার ২৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর বুধবার দুপুরে নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে পুরোপুরি নেভাতে আরও সময় লাগবে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আনোয়ার ফ্যাশন নামে পোশাক কারখানা ও পাশের আলম ট্রেডার্স রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। পরে চারতলা কারখানা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬ জনের পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, গুদামে অন্তত ছয়-সাত ধরনের রাসায়নিক ছিল। এখন তেজস্ক্রিয়তার আশঙ্কায় সেখানে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। তল্লাশি চালাতে ৩৬ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগবে।
সংস্থাটি জানায়, আলম ট্রেডার্স গুদামটি অবৈধ, আগেই তিনবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। গুদামের মূল দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
আগুনে বাতাসে মিশেছে বিষাক্ত ধোঁয়া, যা ফুসফুস ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর বলে সতর্ক করেছে ফায়ার সার্ভিস। এলাকাজুড়ে মাইকিং করা হলেও অনেকেই কৌতূহলবশত ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন।
নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে, জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। স্বজনরা হাসপাতালের সামনে আহাজারি করছেন।
তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ:
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিহতদের পরিবারপ্রতি এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, “জনবহুল এলাকায় রাসায়নিক গুদাম চলতে পারে না। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গুদামটির মালিক শাহ আলম দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে রাসায়নিক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ঘটনার পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।