
ছবি সংগৃহীত
সীমান্ত সংঘর্ষে উত্তপ্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মাঝে হস্তক্ষেপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্কটল্যান্ড সফরে থাকা অবস্থায় তিনি ফোনে দুই দেশের নেতাদের স্পষ্ট বার্তা দেন—যুদ্ধ না থামালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ থাকবে।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পর দ্রুত আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। শনিবার সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানান, উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ সমাধানে সম্মত হয়েছেন।
থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই এক ফেসবুক পোস্টে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতির পক্ষে, তবে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকেও আন্তরিকতা চাই।”
দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে সীমান্তে সংঘর্ষ চলছিল, যার ফলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৩ জন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে শত শত মানুষ। শনিবারও নতুন সংঘর্ষ হয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকায়, যা আগের সংঘর্ষস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে।
এখনো পর্যন্ত দুই দেশই একে অপরকে দোষারোপ করছে। থাইল্যান্ড জানিয়েছে, মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সৈন্যের মৃত্যুর পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত। কম্বোডিয়া বলছে, থাইল্যান্ডই আগ্রাসন চালাচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে “অপ্রয়োজনীয় প্রাণহানি” বলে উল্লেখ করেছেন এবং দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
আসিয়ান গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শান্তি উদ্যোগের একটি প্রস্তাব দেন। কম্বোডিয়া তা গ্রহণ করলেও থাইল্যান্ড এখনো নীতিগত একমত থাকলেও আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি।
মূল বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে ১১শ শতাব্দীর প্রেয়াহ ভিহেয়ার মন্দির। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে মন্দিরটি কম্বোডিয়ার বলে নির্ধারিত হলেও, ২০০৮ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হলে বিরোধ ফের মাথাচাড়া দেয়।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ১ আগস্টের মধ্যে দুই দেশের সঙ্গে আলাদা বাণিজ্যচুক্তি করতে চান। তবে বিশ্লেষকদের মতে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি হলেও বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় নতুন জটিলতা তৈরি করতে পারে।