শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

ভোট ২৩ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ১২:২৭, ৯ নভেম্বর ২০১৮

আপডেট: ১২:২৭, ৯ নভেম্বর ২০১৮

ভোট ২৩ ডিসেম্বর

আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন রেখে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। নির্বাচন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে মতানৈক্যের অবসান না ঘটার মধ্যে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ২২ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। তার ২৩ দিন পর হবে ভোটগ্রহণ। ২৯ নভেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ৩০ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১২ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারণার জন্য ২১ দিন সময় রয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জনের মধ্যে গঠিত দশম সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি, সেই সংসদের মেয়াদ আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৩০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা অনুসারেই তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন পরিচালনাকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি। তফসিল ঘোষণার ভাষণে সিইসি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে নিজেদের মতানৈক্যের অবসান আলোচনার মাধ্যমে ঘটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে তফসিল ঘোষণা পেছানোর উপায় ছিল না বললেও নূরুল হুদা ইতোপূর্বে বলেছিলেন, সব দল চাইলে সংবিধান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে থেকে কমিশন ভোটগ্রহণের সময়সূচি কয়েকদিন পেছানোর কথা ভাবতে পারে। অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপটে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে আসছেন সিইসি। তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে মতবিভেদ কাটাতে দুই প্রধান রাজনৈতিক শিবিরে সংলাপ হলেও তাতে এখনও কোনো সমঝোতা হয়নি। বিএনপিকে নিয়ে গঠিত কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে, সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছে। অন্যদিকে সংবিধানের বাইরে কোনোভাবেই যেতে নারাজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গণভবনে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের সাথে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের সাথে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দফা সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার পর ফের আলোচনার আশা রেখে তফসিল পেছানোর আহ্বান ছিল ঐক্যফ্রন্টের; কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন পাওয়ার পর তফসিল ঘোষণার পথেই হাঁটে ইসি। তফসিল ঘোষণা করে সরকারবিরোধী শিবিরকে আশ্বস্ত করে সিইসি বলেছেন, নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ইসি সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও তা উপেক্ষিত হয়েছে। সিইসি বলেছেন, আগের মতোই বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের কথা বলেছেন সিইসি। শহরাঞ্চলে অল্প কিছু এলাকায় যন্ত্রে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা জানালেও কত সংখ্যক কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার হবে, ভাষণে তা স্পষ্ট করেননি নূরুল হুদা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএমের পক্ষে অবস্থান জানালেও তার ঘোর বিরোধিতা করছে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রশ্ন ওঠায় ইভিএম ব্যবহার এবার না করার পক্ষে মত জানিয়েছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশ। এবার প্রথম অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দিয়েছেন সিইসি। প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ চলার মধ্যে গত কয়েকদিনে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিজেদের বৈঠকের প্রেক্ষাপটে সিইসি বলেছেন, সার্বিকভাবে দেশে ভোটের অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে। সহিংসতা ও বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন প্রতিহিংসা ও সহিংসতায় পরিণত না হয়, সে দিকে দৃষ্টি দিতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নূরুল হুদা। ঢাকার বিজি প্রেস থেকে মনোনয়ন ফরম, রশিদ বই, জামানত বই, প্রতীকের পোস্টার নমুনা, আচরণ বিধির ফরমসহ প্রাথমিক নির্বাচনী সামগ্রী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো হচ্ছে। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন ঢাকার বিজি প্রেস থেকে মনোনয়ন ফরম, রশিদ বই, জামানত বই, প্রতীকের পোস্টার নমুনা, আচরণ বিধির ফরমসহ প্রাথমিক নির্বাচনী সামগ্রী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠানো হচ্ছে। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন আচরণবিধি মেনে চলার জন্য সব দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তাগিদ দেন তিনি। তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক কর্মী, সমর্থক ও এজেন্টদের বিনা কারণে হয়রানি না করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন সিইসি। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরির পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান সিইসি। দলমত নির্বিশেষে সবার ভোটাধিকার প্রয়োগ ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনী প্রচারণায় সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অভিন্ন আচরণ ও “নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড” নিশ্চিত করার সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তফসিল ঘোষণা করে তা বাস্তবায়নে দেশবাসী সবার সহযোগিতা চেয়েছেন নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটির প্রধান নূরুল হুদা।
শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়