
ছবি: ইন্টারনেট
সারা দেশের সঙ্গে ঢাকায়ও তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। রাজধানী কুয়াশাচ্ছন্ন রয়েছে। দিনের অর্ধেক পার হলেও দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় শীত আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকায় এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ঢাকায় আজকের তাপমাত্রাই সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, আজ সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি জানান, আপাতত দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আগামীকাল থেকেই দিনের কুয়াশা অনেকটা কমে যাবে। তবে রাতের কুয়াশা থাকবে। মূলত আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা একটু বাড়তির দিকে থাকলেও ১০ অথবা ১১ জানুয়ারি তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে কমতে থাকবে। তার মানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে।
অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্বত্রই ঠান্ডাজনিত কারণে নানা ধরনের রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের এ সময়ে কিনে খাওয়ার সামর্থ্য হারিয়েছে অনেক পরিবার। সরকারি হাসপাতালে গেলে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ছাড়া তেমন কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না। কিছু ওষুধ পেলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আনতে হয় বাইরে থেকে। সে টাকা না থাকায় রোগ নিয়েই কাটে তাদের জীবন। আমাদের সমাজে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য শীতকাল হলো এক ধরনের অভিশাপ। সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো গ্রীষ্মকালে বা গরমের দিনে ফুটপাত, রেলস্টেশন ও বস্তিতে থাকতে পারে। কিন্তু শীতকালে তাদের জন্য ফুটপাত কিংবা রেলস্টেশনে থাকা খুবই কষ্টকর বা অসহনীয়। তা ছাড়া শীতে তাদের মাঝেমধ্যে না খেয়েও থাকতে হয়।
প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঋতুর পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য প্রতিটি ঋতুই যেন উপভোগ করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। শীতজনিত রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, সে জন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু সরকার নয়, সমাজের বিত্তবানদের এ জন্য এগিয়ে আসতে হবে। কেননা একটু উষ্ণতার জন্য অপেক্ষায় সুবিধাবঞ্চিতরা। এ শীতে দুস্থ অসহায় ও গরিব বস্ত্রহীন কর্মে অক্ষম মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকের মানবিক দায়িত্ব। তাই আসুন আমরা অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শীতার্তদের পাশে দাঁড়াই। বাড়াই সহমর্মিতার হাত। আমাদের সামান্য সহযোগিতাই এনে দেবে তাদের উষ্ণতার ছোঁয়া। ফোটাবে তাদের মুখে হাসি।
ইতিমধ্যে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৭টি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ আছে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও বরিশালের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।