ছবি: ইন্টারনেট
বাংলাদেশের বেশিরভাগই সনদধারী শিক্ষিতরাই চাকুরী না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এই শিক্ষিত বেকারদের অধিকাংশই সমাজ ব্যবস্থাকে দায়ী করে। অথচ নিজেরা ছাত্র অবস্থায় হেসে খেলে আনন্দফূর্তি করে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছে।
একজন ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটকে একজন ইন্টারভিউয়ার যদি জিজ্ঞেস করেন, আমরা কেন আপনাকে হায়ার করবো? অধিকাংশের উত্তর হবে; আমার চাকরিটা দরকার!
এদের অধিকাংশই পাওয়ার পয়েন্ট, এক্সেল অথবা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের কাজই জানেনা। তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে; এরা তাহলে এদের অনার্স / ব্যাচেলর ডিগ্রী সম্পন্ন করলো কিভাবে?
সেকারণেই চাকরি হয়না, অথবা প্রত্যাশা অনুযায়ী চাকরি পায় না।
একটা কথা মনে রাখা জরুরি, কোন প্রতিষ্ঠানের এত সময় নাই যে একজন ব্যক্তিকে নিজেদের খরচে তৈরি করবে। প্রত্যেকেই একজন অভিজ্ঞ যোগ্য ব্যক্তিকেই খোঁজে। এখন প্রশ্ন আসবে, তাহলে ফ্রেশাররা অভিজ্ঞতা অর্জন করবে কিভাবে?
প্রতিটা শিক্ষার্থীর জন্যই কলেজ জীবনের ২ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচণা করতে হবে। এতে ভালো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সুযোগ আর অঢেল সময় পাওয়া যায়। সেই সময়টুকুতে পার্টি আর কনসার্টে না লাফিয়ে একটা যোগ্য সার্কেল বানিয়ে বিভিন্ন সময়োপযোগী আলোচনা করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি/ বেসরকারি সংস্থা বিনামূল্যে ইভেন্ট অর্গানাইজ করে থাকে। যা আপনাকে আপনার সামনের জীবনে একধাপ এগিয়ে দিতে সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া নিজের একটা মাইন্ড সেট করা। যে আমি নিজেকে এই যায়গায় এই বয়সে দেখতে চাই। সে হিসেবে সেই প্রোফেশনের মানুষদের সাথে ওঠাবসা করা। এতে আপনি তাদের স্ট্রাগল গুলোকে কাছ থেকে দেখতে পারবেন। এবং নিজেকে সেই প্রফেশনের মাইন্ড সেটে এগিয়ে রাখতে পারবেন।
আমরা অনেকেই এক্সট্রা এক্টিভিটিসে মনোযোগ দেইনা। দেখুন টাকা পয়সা যোগ্যতা থাকলে আয় করা যাবে। আপনার কর্ম দক্ষতা আপনাকে সর্বদাই সবার চেয়ে এগিয়ে রাখবে। এরজন্য প্রয়োজন প্রচুর লিংক-আপ। মানুষের সঙ্গে এমন ভাবে মিশতে চেষ্টা করুন, যেন প্রথমবার সাক্ষাৎ হলেও বহু বছর তার স্মরণে থাকতে পারেন।
চাকরীর ক্ষেত্রে মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানি গুলোতে এক্সট্রা এক্টিভিটিস খুবই কার্যকরি। একজন ইন্টারভিউয়ার যখন দেখবে, পড়াশুনার পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন ইভেন্ট অথবা চ্যারিটি করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি ধরে নিবেন; এই প্রার্থী যোগাযোগ রক্ষা বা অন্যকে সহায়তার মনোভাব রাখেন সুতরাং এখানেও আপনি সবার চেয়ে আলাদা পরিচয় বহণ করবেন।
পরিশেষে বলতে চাই, চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে দক্ষ হোন; এতে চাকরি আপনার পেছনে ছুটবে। যত সময় নিজের ভাগ্য বা দেশের সিস্টেমকে গালমন্দ করবেন অন্তত সে সময়টাতেও নিজেকে দক্ষ বানাতে কাজে লাগান। দেখবেন জীবন সহজ ও সুন্দর।