
ছবি সংগৃহীত
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় “তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির” আহ্বান জানানো একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আবারও অস্ত্রবিরতির সুযোগ হাতছাড়া হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপত্যকায়।
বাকি ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তা আটকে দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বলেন, “এই প্রস্তাব হামাসকে নিন্দা জানায়নি এবং তাদের নিরস্ত্রীকরণের দাবি তোলেনি, তাই আমরা সমর্থন দিতে পারি না।” যদিও বিশ্বজুড়ে মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে প্রস্তাবটির পক্ষে জোরালো মত উঠে আসে। গাজায় দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও মানবিক সংকটে পড়েছেন, যেখানে অনেকেরই আশ্রয় ও খাদ্য নেই।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, অক্টোবর ৭, ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫৪,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। ইসরায়েল জানায়, এই যুদ্ধের সূচনায় হামাসের হামলায় ১,২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫০ জনের মতো জিম্মি করা হয়।
ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড ইসরায়েলি সামরিক অভিযান এবং মানবিক সহায়তার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণকে “অন্যায্য, অতিরঞ্জিত ও ফলপ্রসূহীন” বলে অভিহিত করেন। ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত দানী দানোন বলেন, “আপনারা শান্তির পথে নয়, সন্ত্রাসের পথে চলেছেন। কোনো প্রস্তাব আমাদের রুখতে পারবে না।”
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ (GHF) বিতরণ কার্যক্রম শুরু করলেও জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থা এতে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা এটিকে পক্ষপাতদুষ্ট ও সামরিকীকৃত সহায়তা ব্যবস্থা বলে মনে করে। নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়োগ হলেও এবার এই প্রস্তাব জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তোলা হতে পারে, যেখানে কোনো দেশের ভেটো ক্ষমতা নেই। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে এটি সহজেই পাশ হয়ে যেতে পারে।
স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল জবোকার বলেন, “এবার যথেষ্ট হয়েছে। ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার দেওয়া হোক, যুদ্ধ নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোতে আবারো থমকে গেল গাজার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ। মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও রাজনীতি ও কূটনৈতিক স্বার্থে বিশ্বনেতারা এখনো ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না। গাজাবাসীর দুর্ভোগ অব্যাহত।