শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

স্বাগত ২০১৯ !!

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১ জানুয়ারি ২০১৯

আপডেট: ০৭:৩৩, ১ জানুয়ারি ২০১৯

স্বাগত ২০১৯ !!

রাজু আনোয়ার: পঞ্জিকার পাতা থেকে গত হলো আরও একটি বছর । বিদায় নিলো ইংরেজী ২০১৮ সাল । ঘটনাবহুল ২০১৮ সালের শেষ মুহুত্বে কাল মধ্য রাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা বাজার সাথে সাথে আকাশে দেখা যায় আতশবাজির বর্ণিল ছটা । হৈ-হৈল্লোড় আর আতশবাজির ছড়াছড়িতে নতুন বছরকে রঙিন আলোয় রাঙিয়ে তুলেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ।  যে সব দেশে গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়,তারা সাধারণত ১ জানুয়ারিতে নববর্ষ পালন করে । এ দিন অতীতের দুঃখ-গ্লানি ধুয়ে-মুছে নতুনভাবে জীবন শুরু করার স্বপ্ন রচনা করেন সবাই । সেই প্রাণাবেগই যেন ধরা পড়ে নববর্ষ পালনের বহুমাত্রিক আয়োজনে । দ্য গার্ডিয়ান ও এএফপির খবরে জানা যায়,বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নতুন ইংরেজি বর্ষ ২০১৯-কে স্বাগত জানিয়েছে প্রশান্ত মহাসগারীয় দ্বীপপুঞ্জ সামোয়া । এরপর নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড । আন্তর্জাতিক মান সময়ের তারতম্যের কারণে নতুন বছরকে আগে বরণ করার সুযোগ পাওয়া দেশগুলোর একটি নিউজিল্যান্ড। নতুন বছরের উৎসবে মেতে ওঠার ক্ষেত্রে বড় শহরগুলোর মধ্যে অকল্যান্ডের সুযোগ আসে সবার আগে ।৫০০ কেজির আতশবাজি পুড়িয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাল তারা (অকল্যান্ড) । এদিকে সামোয়া সরকার ফেসবুকে একটি বার্তায় দেশটির ও বিশ্ব নাগরিকদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছে ।একই সঙ্গে আতশবাজির একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে । অকল্যান্ডের কেন্দ্রস্থলের এক হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতার স্কাই টাওয়ারে ঝুলন্ত একটি বিশাল ঘড়িতে রাত ১২টা বাজার অপেক্ষায় সেখানে জড়ো হন মানুষ । শুরু হয় কাউন্টডাউন।আর ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আকাশে দেখা যায় আতশবাজির বর্ণিল ছটা । নিউজিল্যান্ডের পর অস্ট্রেলিয়ায় স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে । সিডনি হারবারে আতশবাজি দেখার জন্য জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ । আতশবাজির ঝিলিক আলোয় ফুটে ওঠে অপেরা হাউসের বর্ণিল চিত্র । আর তার পাশে বয়ে চলা সিডিনি হার্বারের গোলাপি পানি দেখে মুগ্ধ হয় সবাই । ফ্রান্সের নাগরিকরা ঐতিহ্য হিসেবে নারী-পুরুষ উলঙ্গ হয়ে সাগরে গোসল করেন । এবার জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের বিভেন্ন দেশের বর্ষবরণের ইতিহাস- যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের নববর্ষ উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দু হয় টাইমস স্কোয়ার । এখানে নতুন বছর শুরু হওয়ার ১০ সেকেন্ড আগে এক বিশালাকার ক্রিস্টাল বল নেমে নতুন বর্ষের আগমনের কাউন্টডাউন শুরু করে । এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিউ-ইয়ার পার্টি।এতে প্রায় ৩০ লাখ লোক অংশগ্রহণ করে । যুক্তরাজ্য যুক্তরাজ্যে নতুন বছরে মধ্যরাতের পর যে পুরুষ প্রথম বাড়িতে পা দেয়,বলা হয় সে বাড়িতে সৌভাগ্য নিয়ে আসে । এ সময় পুরুষরা নিজেদের বাড়িতে টাকা, রুটি, কয়লা এবং অন্যান্য সামগ্রী উপহার হিসেবে নিয়ে আসে, যাতে সারা বছর পরিবারের সদস্যদের এ সব জিনিসের কমতি না হয়।মধ্যরাতের পর বাড়িতে পা দেয়া প্রথম মানুষটি অবশ্যই সোনালি বা লাল চুলওয়ালা এবং মহিলা হতে পারবে না । এতে বাড়িতে দুর্ভাগ্য আসে।লন্ডনে নববর্ষের আগ মুহূর্তে ট্রাফালগার স্কোয়ার এবং পিকাডেলি সার্কাসে বিশাল পরিসরে মানুষ সমবেত হয়।মধ্যরাতে বিগবেনের ধ্বনি শুনে এরা একত্রে নববর্ষকে বরণ করে নেয় । ফ্রান্স ফ্রান্সে বছরের শেষ দিনে ঘরে থাকা সব মদ শেষ করতেই হবে।নতুন বছরে ঘরে পুরনো মদ পড়ে থাকা অশুভ ।সৌভাগ্য ঘরে আসবে না।তবে ঘরে-থাকা মদ ফেলে দিলে চলবে না।খেয়েই শেষ করতে হবে৷। মদে মশগুল রাত,নতুন ভোর ! অস্ট্রেলিয়া সিডনিতে নববর্ষ উপলক্ষে প্রায় ৮০ হাজার আতশবাজী ফোটানো হয় যা ১৫ লাখ লোক উপভোগ করে । প্যারাগুয়ে প্যারাগুয়ে বছরের শেষ পাঁচদিন তাদের ঘরে কোনো আগুন জ্বলে না।হয় না কোনো রান্না।ওই পাঁচদিনকে তারা পালন করে ‘ঠান্ডা খাবার খাওয়ার দিন’ হিসেবে । ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর নতুন বছরের ঘণ্টা বাজলে হেঁসেলে আগুন জ্বেলে নতুন নতুন পদ, একসঙ্গে খেয়ে নতুন বছরে পা দেন তারা ।  গ্রেগোরিয়ান নববর্ষ রোমান ক্যালেন্ডারে নতুন বছর শুরু হতো ১ মার্চ থেকে । ল্যাটিন ভাষায় সেপ্টেম্বরের অর্থ সাত, অক্টোবর আট, নভেম্বর নয় এবং ডিসেম্বর দশ । সে সময় রোমান সরকারের নতুন অধিবেশন শুরু হতো জানুয়ারি মাস থেকে ।জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭ সালে এ ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন করে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সৃষ্টি করেন । এতে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৪ সালে মার্ক অ্যান্টোনির কনসুল এক দফা পরিবর্তন করার পর খ্রিষ্টপূর্ব ৮ সালে এম্পরর অপাসটাস সিজার আরেক দফা পরিবর্তন করেন । সর্বশেষ পোপ ১৩তম গ্রেগোরি ১৫৮২ সালে এই ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন করে বর্তমান কাঠামোতে নিয়ে আসেন । এই পরিবর্তিত ক্যালেন্ডারে নতুন বর্ষের শুরু হয় ১ জানুয়ারি । জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনটি মধ্যযুগে ধর্মীয় দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল । পোল্যান্ড পোল্যান্ডেও বর্ষবরণটা বেশ মজার । এখানকার তরুণীরা বর্ষবরণের রাতে খরগোশের মতো পোশাক পরে জড়ো হয় ।এরপর খরগোশের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি জোগাড় করে । তারপর ওই শাক-সবজির যতটা সম্ভব চিবিয়ে খায়!শাকসবজি খেয়ে নতুন বছরে পা দিলে নাকি নতুন বছরের দিন সুন্দর হবে । হাঙ্গেরি বছরের শেষ দিন হাঙ্গেরিবাসী হাঁস,মুরগি বা কোনো ধরনের পাখির মাংস খান না । উড়তে পারে এমন পাখির মাংস খেলে নতুন বছরে জীবন থেকে সব সৌভাগ্য উড়ে যাবে ! তারা নতুন বছরে পরিচিত বা বন্ধুদের যে উপহার দেন,তাতে চিমনি পরিষ্কার করছেন এমন একজন শ্রমিকের ছবি থাকে । উপহারে এই ছবিটি থাকলে পুরনো বছরের সমস্ত দুঃখ নতুন বছরে মুছে যাবে । স্কটল্যান্ড এ সময় সবাই নিজেদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করে নতুন বছরের আগমনের প্রস্তুতি নেয় । এ সময় জুনিপার গাছের ডাল পোড়ানো হয় । নববর্ষের দিন যে মানুষ প্রথম বাড়িতে পা রাখে সে-ই ওই বছর বাড়ির সদস্যদের ভাগ্য নির্ধারণ করে।স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় যে নববর্ষ উৎসব হয় তা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উৎসবগুলোর মধ্যে একটি । চার দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের সব প্রান্ত থেকে মানুষ আসে । জার্মানি এখানে মানুষ ঠান্ডা পানির মধ্যে তরল সিসার টুকরা ঠেলে দেয় । সিসার টুকরা যে রকম আকার বানায় তা দেখে ভবিষ্যৎ নির্ণয় করা হয় । নববর্ষের আগে খাওয়া খাবারের কিছু অংশ মধ্যরাতের জন্য রেখে দেয়া হয়, যাতে করে নতুন বছর ঘরে পর্যাপ্ত খাবার থাকে । চীন পূর্ণিমার শুরুর দিন থেকে শুক্লপক্ষের পনেরো দিন উৎসব চলে নববর্ষ উপলক্ষে।চীনারা নববর্ষ পালন করে প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী । নববর্ষের প্রথম দিনে তারা স্বর্গ ও পৃথিবীর দেবতাকে তুষ্ট করে নানা উপাসনা-উপাচারে, দ্বিতীয় দিন পূর্বপুরুষের মঙ্গল কামনা করে।‘ওয়েইলু’ নামক বিশেষ ভোজনের আয়োজন করা হয় এ দিন । পক্ষব্যাপী আলাদা আলাদা অনুষ্ঠানের মধ্যে সপ্তম দিনটি পালিত হয় ‘শস্য দিবস’ নামে । জাপান জাপানে নববর্ষের সময় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে । খারাপ আত্মাকে দূরে রাখার জন্য এ সময় বাড়ির বাইরে দড়ি দিয়ে খড়ের টুকরো ঝুলিয়ে দেয়া হয়।এটাকে তারা সুখ এবং সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখে । নতুন বর্ষ শুরু হওয়ার সাথে সাথে জাপানিরা হাসা শুরু করে, এতে নতুন বছর সৌভাগ্য নিয়ে আসে । বুলগেরিয়া বুলগেরিয়ায় বর্ষবরণের দিন হাঁচি দেয়া বেশ মঙ্গলের। বর্ষবরণের দিন তাদের বাড়িতে আসা কোনো অতিথি যদি হাঁচি দেন, তাহলে বাড়ির কর্তা তাকে নিজের খামারে নিয়ে যান । এরপর ওই ব্যক্তির প্রথম নজর যে পশুর ওপর পড়বে, সেই পশুটি ওই ব্যক্তিকে উপহার দেয়া হয় । ভিয়েতনাম ভিয়েতনামের উত্তরের সংখ্যালঘু জাতি বছরের শেষদিনে প্রতিদিন জল সংগ্রহ করার জলাধারে দলবেঁধে গিয়ে মোমবাতি জ্বেলে মাটিতে মাথা ছুঁইয়ে প্রণাম করে এক কলস জল নিয়ে আসে । এরপর ওই জল দিয়ে বছরের প্রথম দিন রান্না করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে উৎসর্গ করার পর নিজেরা খায়। বছরের প্রথম দিনে স্যুপ জাতীয় খাবার থাকে না । এছাড়া অনেকে নদী বা পুকুরে কার্প মাছ ছাড়েন । আফ্রিকা আফ্রিকার মাদাগাস্কারে নতুন বছর শুরুর সাতদিন আগে থেকে মাংস খাওয়া বন্ধ। বছরে প্রথম দিন বাড়িতে মুরগির মাংস রান্না হবে । প্রথমে তা খেতে দেয়া হবে বাবা-মাকে। বাবা-মাকে খেতে দেয়া হয় মুরগির লেজের দিকের অংশটা । আর ভাই-বোনদের দেয়া হয় মুরগির পা । ব্রাজিল ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো সমুদ্রসৈকতে নববর্ষের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হয় । এর অন্যতম আকর্ষণ চোখধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী । এ দিন অনেকেই সাদা পোশাক পরে। সমুদ্রে সাতটি ডুব দিলে এবং সাতটি ফুল ছুড়ে দিয়ে তারা মনে করে বছরটি খুব ভালো কাটবে । এ উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় দুই মিলিয়ন পর্যটক যোগ দেয় । আর্জেন্টিনা আর্জেন্টিনায় নববর্ষের আগের দিন রাত্রে পরিবারের সবাই একত্রে খাবার টেবিলে বসে আহার করে । ভোর পর্যন্ত চলে নানা অনুষ্ঠান । নববর্ষের প্রথম দিন নদী বা পুকুরে সাঁতার কেটে তারা নববর্ষ উদযাপন করে । কোরিয়া কোরিয়াতে নববর্ষ শুরুর সময় কেউ ঘুমায় না । এ সময় ঘুমালে নাকি চোখের ভ্রূ সাদা হয়ে যায় ! রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে টিভিতে ৩৩ বার ঘণ্টা বাজানো হয় । কোরিয়ার ৩৩ বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটি করা হয় । কোরিয়াতে প্রায় সবাই সূর্যোদয় দেখে। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ার সময় একজন আরেকজনকে শুভেচ্ছা জানায় । মেক্সিকো মেক্সিকোতেও ১২টা বাজার সাথে সাথে ১২ বার ঘণ্টা বাজানো হয় । এ সময় প্রতি ঘণ্টাধ্বনির সাথে একটি করে আঙুর খাওয়া হয় । তারা বিশ্বাস করে এ সময় যা কামনা করা হয়, তাই পূরণ হয় । ভারত ভারতে সম্রাট আকবরের সময় যে নওরোজ উৎসব হতো তা সর্বভারতীয় উৎসবের মর্যাদা পায়নি । অনেকে ভারতীয় বর্ষবরণ উৎসবকে দিওয়ালি উৎসব বলে অভিহিত করেন । এটি হয় বিভিন্ন রাজ্য বা সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী । পাঞ্জাবে নববর্ষ উৎসব পরিচিত বৈশাখী নামে । নববর্ষে পুষ্পসজ্জা প্রায় সর্বভারতীয় রেওয়াজ, দক্ষিণ ভারতের অঞ্চলবিশেষের মজাদার খাবার ও পুষ্পাহার গুরুত্বপূর্ণ প্রথা । তবে বর্তমানে ইংরেজি নববর্ষ পালন সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান । বাংলাদেশ বাংলাদেশে প্রধানত নববর্ষ হিসেবে পহেলা বৈশাখকে জাকজমকভাবে পালন করা হয় । রাষ্ট্রীয়ভাবেও এতে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয় । তবে ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষকেও পালন করা হয় । এ উৎসব অনেকটা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক পালিত হয় । ইন্টারনেটের সুবাধে সমসাময়িককালে বাংলাদেশের তরুন তরুনী হতে বিভিন্ন বয়সী মানুষ মোবাইলে একে অপরকে ম্যাসেজ কিংবা গ্রাফিক্স এর মার্ধ্যমে  নানান আকর্ষণীয় ডিজাইনের হেপি নিউ ইয়ার কার্ড তৈরি করে পরস্পরকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানায় । বর্ষ যায় বর্ষ আসে । যুগ যুগ ধরে এ দিনটিকে পালন করে  বিশ্বের নানান দেশের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ । নববর্ষ পালনের রীতি দেশ-কাল ভেদে অনেক বৈচিত্রময়  । এমন অনেক আজব আজব রীতিও পালন করা হয় নববর্ষ পালনের ক্ষেত্রে যা খুবই হাস্যকরও বটে । আলোআভানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/আরএ            
শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়