ফাইল ফটো
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কিন্তু ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতাকর্মীরা।
রোববার রাত সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত প্রধান ফটকের সামনে আগুন জ্বালিয়ে এ বিক্ষোভ চলে। নেতাকর্মীরা জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই দাবি আদায় না হবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাদের এই অবরোধ চলবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপ ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সন্তুষ্ট না হয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে, পদপ্রাপ্ত সাহিল কবির নামে একজন নেতাকে মারধর করে। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়। এছাড়া বিজয় গ্রুপের নেতা ইলিয়াসের কক্ষ ভাঙচুর করে
এদিকে সোমবার (১ আগস্ট) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিকাল ৩ টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, মৌলবাদী জামাত-শিবিরের ক্যান্টনমেন্টকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের মিনি ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে বিনির্মাণ করেছেন। ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে বিবাহিত অছাত্র জামাত-শিবির ব্যাকগ্রাউন্ড কর্মীদের বিভিন্ন অপরাধীদের দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এরই প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের ডাক দিই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে। এবং ইয়াবা ব্যবসায়ী ইলিয়াছকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। মো. ইলিয়াসকে (অছাত্র, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও টেন্ডার বাজ) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে।
২। পূর্ণাঙ্গ কমিটি বর্ধিত করতে হবে।
৩। সকল অছাত্র, শিবির, বিএনপি-জামাত ও বিবাহিত কর্মীদের ঘোষিত কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে।
৪। আমাদের ৫০জন ত্যাগী, মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্রদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে আজকের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ
কমিটি প্রদান করতে হবে।
৫। পদবীতে সিনিয়র জুনিয়র ক্রম ঠিক করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালে চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়
চবির কমিটিতে সভাপতি ছিলেন রেজাউল হক রুবেল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর সাথে ৬৯ জন সহ-সভাপতি, ১১ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ১১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক রাখা হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ এই কমিটি অবৈধ দাবি করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রধান ফটক আটকে দেওয়ায় ক্যাম্পাস থেকে সোমবার (১ আগস্ট) থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো শিক্ষক বাস ও শাটল ট্রেন।
অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা সকাল ৮ টার দিকে শাটল ট্রেনের চালককে অপহরণ করে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'বিক্ষোভকারীরা চালককে অপহরণ করেছে। আমরা রেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতেছি। তবে তারা যে প্রধান বন্ধ ফটক করেছে এটার মীমাংসার বিষয়। এখানে প্রশাসন কি করতে পারে।'
অন্যদিকে, দিনভর বিক্ষোভের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ওই চারটি বিভাগ হলো- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস, ফাইন্যান্স বিভাগ ও ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ। পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমির মোহাম্মদ মুছা।
তিনি জানান, বিক্ষোভের কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যেহেতু ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি, তাই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালে চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়
