শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিকের নতুন বিনিয়োগ

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ১ অক্টোবর ২০১৮

আপডেট: ০৮:২৫, ১ অক্টোবর ২০১৮

বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউনিকের নতুন বিনিয়োগ

পূর্বঘোষণা অনুসারে, যৌথ উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ এগিয়ে নিচ্ছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড। লিড পার্টনার হিসেবে প্রথম ধাপে অগ্রিম বাবদ ইপিসি চুক্তিমূল্যের ১০ শতাংশ বিদেশী কোম্পানিকে পরিশোধ করেছে তারা, স্থানীয় মুদ্রায় যার মান ২৭২ কোটি টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জ ও কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইউনিক হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যুৎ সাবসিডিয়ারি ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের আংশিক ইকুইটি বাবদ ২৭২ কোটি টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পর্ষদ। প্রথম দফায় পরিশোধ করা এ অর্থ বিদ্যুৎ প্রকল্পটির ইপিসি চুক্তির বিপরীতে অগ্রিম হিসেবে জিই গ্লোবাল পার্টস অ্যান্ড প্রডাক্টস জিএমবিএইচকে পরিশোধ করা হবে। সন্ধ্যায় ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের মহাব্যবস্থাপক (ফিন্যান্স) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বণিক বার্তাকে বলেন, কনসোর্টিয়ামের লিড পার্টনার ইউনিক হোটেলের কাছ থেকে ইকুইটি বাবদ পাওয়া ২৭২ কোটি টাকা আমরা জিই গ্লোবাল পার্টস অ্যান্ড প্রডাক্টসকে পরিশোধ করে দিয়েছি। ৫২ কোটি ২০ লাখ ডলারের (প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা) এ প্রকল্পে আমরা ঋণ ও মূলধন অনুপাত ৭৫:২৫ রাখার চেষ্টা করছি। এ হিসাবে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ইকুইটি দেবে কনসোর্টিয়ামের সদস্যরা। কাজ যত এগোবে, উদ্যোক্তা ও ঋণদাতাদের কাছ থেকে আমরা আরো বেশি তহবিল পাব। প্রকল্পের হালনাগাদ অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান, সরকারের কাছ থেকে লেটার অব ইন্ট্যান্ট (এলওআই) পাওয়ার পর চূড়ান্ত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) করার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। ৩৬ মাসের মধ্যে উৎপাদনে আসতে হবে আমাদের। উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই মেঘনাঘাটে বিল্ড ওন অ্যান্ড অপারেট (বিওও) শর্তে ৫৮৪ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) এলওআই পায় ইউনিক হোটেল নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম। প্রকল্পের ৬৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ শেয়ার থাকবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ-অবকাশ কোম্পানিটির হাতে। গ্যাস/আর-এলএনজিভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ প্রকল্পটির ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকবে বিদেশী কারিগরি অংশীদার গুয়াইয়ামা পিআর হোল্ডিংস বিভি এবং বাকি ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করবে স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফিন্যান্স লিমিটেড। সে সময় ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের কোম্পানি সচিব মো. শরীফ হাসান বণিক বার্তাকে জানিয়েছিলেন, উৎপাদন শুরুর পর ২২ বছর সরকার আমাদের কাছ থেকে ৫৮৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করবে। আমরা ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার প্লান্ট করব। আমাদের কারিগরি অংশীদার গুয়াইয়ামা মার্কিন জায়ান্ট জেনারেল ইলেকট্রিকের একটি সাবসিডিয়ারি। তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি ডলার। প্রতি ডলারের দাম ৮৪ টাকা ধরলে অংকটি দাঁড়ায় ৪ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। মেঘনাঘাট এলাকায় নিজেদের প্লট থেকে প্রকল্পের জন্য ২৫ একর জমিও দেবে ইউনিক হোটেল কর্তৃপক্ষ। সিন্ডিকেটেড ঋণের আওতায় পরিশোধিত মূলধনের অতিরিক্ত অর্থের জোগান দেবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কারিগরি অংশীদার গুয়াইয়ামা প্লান্টের সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। এগুলোর মূল্যমানই তাদের ইকুইটিতে রূপান্তর হবে। এলওআই অনুসারে, জ্বালানি খরচের বাইরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য সরকারের কাছ থেকে লিভারেজ ট্যারিফ হিসেবে ২ দশমিক শূন্য ২৩৬ সেন্ট পাবে প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ইউনিক হোটেল। এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয় ১ টাকা ৮০ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৮৮ টাকা ৮২ পয়সায়। সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই, ২০১৭-মার্চ, ২০১৮) ইউনিক হোটেলের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৪৯ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৮৮ টাকা ৪০ পয়সায়। ডিএসইতে ইউনিক হোটেল শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৫৩ টাকা ৭০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা। ২০১২ সালে তালিকাভুক্ত ইউনিক হোটেলের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ২৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। রিজার্ভ ১ হাজার ৭০২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের ৪৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ২৮ দশমিক ২১, বিদেশী বিনিয়োগকারী ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং বাকি ২৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ২৯ দশমিক ৮৩, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ২৩ দশমিক ২৮।

 
শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়