ভাঙা ঘরেই থাকেন মুক্তিযোদ্ধা মান্নান

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন মো. আ. মান্নান সিকদার।সকল বৈষম্যের অবসান ঘটাতে দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করতে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করলেও জীবন যুদ্ধে তিনি এখন পরাজিত সৈনিক।
বৃদ্ধ বয়সে অভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন চলছে তার। তার ওপর থাকার ঘড়টিও ভাঙা। রোদ-বৃষ্টি-পানির সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকতে হয় সেই ভাঙা ঘরে। ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্ব রামচন্দ্রপুর গ্রামের এই মুক্তিযোদ্ধা জানালেন তার দুঃখ আর কষ্টের কথা।
চরম দারিদ্রতার কষাঘাতে দিন পার করা মুক্তিযোদ্ধা মো. আ . মান্নান সিকদার তার মাসিক সম্মানি ভাতার ১২ হাজার টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে তার। এরমধ্যে ২ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে ঢাকায় অল্প বেতনে চাকরি করে নিজের খরচ বহন করে। আর ছোট ছেলে বিএম কলেজে লেখাপড়া করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,২ রুম বিশিষ্ট জরাজীর্ণ একটি ভাঙা টিনসেড ঘরে বসবাস করছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। অর্থের অভাবে সংস্কার করতে পারছেন না তার বসত ঘরটি। একটু বৃষ্টি হলেই ছিদ্র টিনের চালা থেকে পানি পরে ঘরের আসবাবপত্র ভিজে যায়।
মুক্তিযোদ্ধা মো. আ. মান্নান সিকদার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশ স্বাধীনের পরে পুলিশ বিভাগে যোগদান করেছি। ২০০৪ সালে চাকুরি থেকে অবসরে যাবার সময়ে কোনো মতে থাকার জন্য একটি টিনসেড ঘর করেছি। নগদ পুঁজি বলতে কিছুই নেই যার কারণে ঘর মেরামত করতে পারছি না। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করার ঘোঘণা দিয়েছেন। আমি অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছি। আবাসন নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ পেলে আমার উপকার হবে, আমাকে আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না।’
ঝালকাঠির অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দ প্রকল্পের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেন বলেন,‘আমরা সচ্ছতার ভিত্তিতে প্রকৃত অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাছাই করে তাদেরকে এই সহযোগিতার জন্য মনোনীত করব। মুক্তিযোদ্ধা মো. আ. মান্নান সিকদার একজন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা। তিনি এই বরাদ্দ পাবার জন্য যোগ্য।’
ঝালকাঠির অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দ প্রকল্পের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ইমাম বলেন, ‘প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি গিয়ে আমরা তদন্ত করবো। এরপর প্রকৃত পক্ষে যারা অসহায় তাদের নামে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করব।’
আলোআভানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/আরএ